জমির মালিকানা দ্বন্দ্বে বলি ৩০০ মেহগনি গাছ, থানায় অভিযোগ
আমি ও আমার শাশুড়ী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তারা আমাদের মারধর করে। একপর্যায়ে সোলাইমান নামের একজন আমার গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা চালায়। আবুল কাশেম ও আব্দুর রহমান আমাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
জমির মালিকানা বিরোধের জেরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম হাসলী গ্রামে প্রায় ৩০০টি মেহগনি গাছ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইয়াসমিন মানিকগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে ইয়াসমিনের শাশুড়ীর সম্পত্তি—আরএস ৩৮৭ খতিয়ানের ২০৪২ দাগে অবস্থিত ৭৭ ডিসিমেল জমিতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ জন ব্যক্তি অনধিকার প্রবেশ করেন। তারা সেখান থেকে প্রায় ৩০০টি মেহগনি গাছ তুলে নিয়ে যান, যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা।
ভুক্তভোগী ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি ও আমার শাশুড়ী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তারা আমাদের মারধর করে। একপর্যায়ে সোলাইমান নামের একজন আমার গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা চালায়। আবুল কাশেম ও আব্দুর রহমান আমাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’
হামলার সময় ইয়াসমিনের কানের ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের দুল এবং তার শাশুড়ীর গলার ৮ আনা ওজনের চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় পশ্চিম হাসলী গ্রামের আবুল কাশেম (৫৮), আব্দুর রহমান (৬০), আতোয়ার হোসেন (৫৫), জাহাঙ্গীর হোসেন (২৩), সোলাইমান (২৩), ইয়াছিন (২২), বেদেনা (৪০), মাজেদা (৫৫), মর্জিনা (৩৭), এবং সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রামের নাজিমুদ্দিন (৫৮), আজাহার (৫৫), শাজাহান (৬২)-কে বিবাদী করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর দেবর মোহাম্মদ আলী জানান, ‘এই জমিটি আমাদের মা-বাবার নামে নামজারি করা ও দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে থাকা জমি। আমার দুই ভাই বিদেশে আর আমি হরিরামপুরে চাকরি করি, তাই জমি আবাদ করেন স্থানীয় একজন বর্গাচাষী। গত ২১ মে সেই জমিতে চাষ দিতে গেলে আবুল কাশেম, আব্দুর রহমান, আতোয়ার রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, সোলাইমান, নাজিমুদ্দিন, আজাহার ও সাজাহান অস্ত্র নিয়ে এসে জমি বেদখলের হুমকি দেয়।’
তিনি আরও জানান, বসতবাড়ির ১৪ শতক জমি আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে জোরপূর্বক দখলে রেখেছে বিবাদীরা। বর্তমানে পুরো সম্পত্তি থেকে তাদের উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই গত ২১ মে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
