গুদামে রাখা ফসলের বিপরীতে এখন ঋণ নিতে পারছেন কৃষকরা

প্রকল্পটি ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চলবে। এরমধ্যে গুদামগুলোর আধুনিকায়ন করার কাজ করা হচ্ছে। ২৭ জেলার ৫৬টি উপজেলায় মোট ৮১টি গুদামের মাধ্যমে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কৃষকরা তাদের শস্যের পরিমাণের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন।

May 18, 2025 - 14:58
May 18, 2025 - 15:20
 0  12
গুদামে রাখা ফসলের বিপরীতে এখন ঋণ নিতে পারছেন কৃষকরা

সরকারি গুদামে থাকা ফসলের বিপরীতে এখন ব্যাংক ঋণ নিতে পারছেন কৃষকরা। গুদামে জমা থাকা ফসলের মূল্যের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত এই ঋণ নেওয়া যাচ্ছে। এতে অর্থের প্রয়োজনের সময় লোকসানে ফসল বিক্রির প্রবণতা থেকে কৃষকরা বেরিয়ে আসতে পারবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বোরো ধান কাটার পরপরই তা বিক্রি করে দেওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যায় কৃষকদের মধ্যে। কারণ তাদের ওপর ধান বিক্রি করে সেচ, সার, জামি চাষের বিপরীতে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধের চাপ থাকে।

কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর সরবরাহ থাকার কারণে ধানের দাম পড়ে যায়, তখন উৎপাদন খরচের নিচে গিয়ে শস্য বিক্রি করতে বাধ্য হন কৃষক। শুধু ধান নয়, অন্যান্য মৌসুমি দানাদার ফসলের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই।

তবে এখন সেই পরিস্থিতিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তাদের নির্মিত প্রায় ৮১টি গুদামে কৃষকরা ধান রেখে, তার বিপরীতে ব্যাংক ঋণ নিতে পারছেন খুব সহযেইযা দিয়ে জমি চাষ বা সেচের বকেয়া খরচ সহজেই পরিশোধ করতে পারছেন তারা। এতে করে যখন ধানের পণ্যের ন্যায্য দাম ওঠে, তখন তা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

শনিবার (১৭ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার সরকারি সমন্বিত ভবনের মাল্টিপারপাস হলরুমে দিনব্যাপী আয়োজিত 'শস্য গুদাম আধুনিকীকরণ ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের' আওতায় আয়োজিত এক ওয়ার্কশপ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এএসএম গোলাম হাফিজ।

কৃষি বিপণন অধিপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ফাতেমা ওয়াদুদের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগের পরিচালক দেবাশীষ সরকার।

জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চলবে। এরমধ্যে গুদামগুলোর আধুনিকায়ন করার কাজ করা হচ্ছে। ২৭ জেলার ৫৬টি উপজেলায় মোট ৮১টি গুদামের মাধ্যমে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কৃষকরা তাদের শস্যের পরিমাণের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন।

প্রতি বছর গড়ে ,১১৬ জন কৃষক পরিবার ,০০৩ মেট্রিক টন শস্য জমার বিপরীতে কোটি ৮৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। সোনালী, রুপালী, অগ্রণী, জনতা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।

অতিথি অধ্যাপক এএসএম গোলাম হাফিজ বলেন, ‘দানাদার শস্য সংগ্রহের পর কৃষকদের নগদ টাকার প্রয়োজন হয় বিধায় সংগ্রহের সময় শস্য বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। ব্যাংক থেকে শস্য জমার বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করার ফলে নগদ টাকার প্রয়োজন মিটবে।’

তিনি বলেন, ‘শস্য গুদাম ঋণ কার্যক্রম গুদামে দানাদার শস্য সংরক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে খাদ্য মজুদ নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। কৃষকদের বিপণন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারে সুবিধামত সময়ে দানাদার শস্য বিক্রি করে মূল্য সুবিধা নিতে পারবে।

কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন মানিকগঞ্জসহ ছয় জেলার একশত কৃষক গুদামরক্ষক।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক . মানোয়ার হোসেন মোল্লা, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পরিচালক . মোহাম্মদ মুসলিম, উপ-পরিচালক মো. মফিদুল ইসলাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক . রবীআহ নূর আহমেদ, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোরশেদ আল মাহমুদ প্রমুখ।