শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা মোয়াজ্জিনের, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

সকালে শিশুটির খালা ফোন করে জানায় মোয়াজ্জেম বাশার তার সাথে খারাপ কাজ করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুনি, বাশারের মামা ইসহাক ও লাভলু শিশুটির আত্মীয়দের বাসায় গিয়ে বাশারকে চড়থাপ্পড় মেরে মাফ চাইয়ে ঘটানাটির মিমাংসা করে।

Apr 9, 2025 - 20:35
 0  121
শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা মোয়াজ্জিনের, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বান্দুটিয়া এলাকায় সাত বছরের এক শিশুর উপর ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আল্পনা জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন বাশার ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ বুধবার সকালে।

অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর বাশারের মামা ইসহাক ও স্থানীয় ব্যক্তি লাভলুসহ কয়েকজন মিলে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর অভিযুক্ত বাশার এলাকা থেকে পালিয়ে যান।

অভিযুক্ত বাশার ভূঁইয়া ওই মসজিদে প্রায় এক বছর ধরে মোয়াজ্জিনের চাকরি করে আসছিলেন।

ভুক্তভোগী শিশুটি জানায়, আজ সকালে কাকি আমাকে মক্তবে দিয়ে আসছে। তার কাছে সব পড়া দিসি। সবার পড়া শেষ হলে সবাইকে ছুটি দিসে আমাকে বাদে। আমি বলছি আমার স্কুল আছে। আমাকে বলে তুমি একটু পরে যাও। আমার সাথে আরও দুইজন মেয়ে ছিল ওদেরকে বারান্দা ঝাড়ু দেওয়ার কথা বললে ওরা ঝাড়ু দিতে যায়। পরে আমাকে বলে পা ফাঁক কর। আমি কইছি কিসের জন্য। কয় কর; পরে করছি ওমনি আমার প্যান্টের ভিতর দিয়ে হাত ঢুকাইছে। যখন দেখছে মানুষ আসছে তখন আবার হাত সরাইছে। পরে আবারও হাত ঢুকাইছে। যখন ওদের বারান্দা ঝাড়ু দেওয়া শেষ হয়েছে তখন আবার ছেড়ে দিসে। 

শিশুটির দুলাভাই তিহান শিকদার জানান, ভুক্তভোগী তার স্ত্রীর চাচাতো বোন। শিশুটির বাবা প্রবাসী, এবং মা ও তিন বোন বান্দুটিয়ায় থাকেন। শিশুটির নানি অসুস্থ থাকায় তার মা ঢাকায় হাসপাতালে ছিলেন।

তিনি বলেন, সকালে শিশুটির খালা ফোন করে জানায় মোয়াজ্জেম বাশার তার সাথে খারাপ কাজ করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুনি, বাশারের মামা ইসহাক ও লাভলু শিশুটির আত্মীয়দের বাসায় গিয়ে বাশারকে চড়থাপ্পড় মেরে মাফ চাইয়ে ঘটানাটির মিমাংসা করে। মিমাংসার আধাঘন্টার মধ্যেই ভয় দেখিয়ে ওদের তিনবোনকে নানির বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর ঘন্টা খানিকপর বাশারের মা আমার কাছে এসে আমার পায়ে পড়ে মাফ চায় আর বলে ছেলেটা ভুল করে ফেলেছে। তুমিতো জানই ও আগে থেকেই একটু পাজি।

মিমাংসার পর ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এলাকাবাসী বান্দুটিয়া বাজারে ইসহাক ও লাভলুকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে তারা মিমাংসার কথা স্বীকার করেন।

লাভলু জানান, সকালে ইসহাক আমাকে ডাকলে আমি যাই। ইসহাক তার ভাগিনাকে মারধর করে মিমাংসা করে। মিমাংসার এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, যেহেতু ধর্ষণ হয়নি, তাই সামাজিক কারণে মিমাংসা করা হয়েছে।

বান্দুটিয়া এলাকার বিট পুলিশিং কর্মকর্তা এসআই মনসুর বলেন, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন।