সাংবাদিক মাসুম বাদশাহ’র ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মামলা

হামলার সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং তার হাতে থাকা একটি সিকো ফাইভ ব্র্যান্ডের ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। পরে অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করেন।

Apr 17, 2025 - 22:17
 0  19
সাংবাদিক মাসুম বাদশাহ’র ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মামলা
সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক মাসুম বাদশাহ

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সাংবাদিক মাসুম বাদশাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তিনি দৈনিক ভোরের কাগজের সিংগাইর উপজেলা প্রতিনিধি ও সিংগাইর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) জে ও এম তৌফিক আজম। বুধবার রাতে আহত সাংবাদিক নিজেই বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন—উপজেলার ধল্লা মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম ওরফে ইয়াবা সালাম (৫৩), ধল্লা লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন গাদুর ছেলে হুমায়ুন ওরফে ইয়াবা হুমায়ুন (৪০), তুফান আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), কাউছারের ছেলে জিসান (২২) এবং জোনাব আলীর ছেলে ওয়াজ উদ্দিন (৪৫)। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে ধল্লা বাজারের সাংবাদিক মাসুম বাদশাহর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান “ধল্লা পল্লী উন্নয়ন ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা’-এর অফিসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। অভিযুক্ত সালামের নেতৃত্বে হামলাকারীরা অতর্কিত এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় হুমায়ুনের হাতে থাকা রডের আঘাতে মাসুম বাদশাহর বাম হাত ভেঙে যায়। আনোয়ার দা দিয়ে তার মাথার দিকে কোপ মারলে তা ডান হাতের কব্জিতে লাগে। এছাড়া সালামের হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে কোপ মারলে তা পিঠে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়।

হামলার সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং তার হাতে থাকা একটি সিকো ফাইভ ব্র্যান্ডের ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। পরে অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করেন।

চিকিৎসাধীন সাংবাদিক মাসুম বাদশাহ জানান, হামলাকারীরা এলাকায় মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িত। তাদের একাধিক অপকর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশ করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে হুমায়ুনের ভাই ও বোনের দুর্নীতির খবর দৈনিক ভোরের কাগজে একাধিকবার ছাপা হয়। এরই জেরে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এই হামলা চালানো হয়।

তিনি আরও বলেন, হামলাকারীরা ৫ আগস্টের পর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং তার কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় তাকে হত্যা চেষ্টার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়। তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিংগাইর প্রেসক্লাব এক জরুরি সভায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি মানিকগঞ্জের সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও এ হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই পার্থ শেখর ঘোষ বলেন, “ঘটনার পর থেকেই আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। তাদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।”