নাম পরিবর্তন করেও শেষ রক্ষা হলোনা কিলার কিনুর

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চাঞ্চল্যকর জাহিদ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মো. রফিকুল ইসলাম কিনু ওরফে কিলার কিনুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। গ্রেফতার এড়াতে গত ১৪ বছর ধরে কিনু তার নাম পরিবর্তন করে মো. মিলন নাম ব্যবহার করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে ডিএমপির উত্তরখান থানাধীন পোলারটেক এলাকায় সাড়াশি অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো. রফিকুল ইসলাম কিনু মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার কাকরাখী এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান নিয়ে ডিএমপির উত্তরখান থানা এলাকায় অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আরিফ হোসেন।
লে. কমান্ডার আরিফ হোসেন জানান, গ্রেফতার কিনু, টিপু, ভবতোষ ও ভিকটিম আরএমও জাহিদ একই এলাকায় স্থানীয় রাজনীতি করত। টিপুর বড় ভাইয়ের সাথে সানজিদা নামের এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার সাথে পারিবারিক ভাবে জাহিদের বিয়ে ঠিক হয়। এ বিষয় নিয়ে টিপুর সাথে জাহিদের কয়েক দফায় বিবাদ সৃষ্টি হয় ও টিপু জাহিদকে বিয়ে না করার জন্য হুমকি দেয়। জাহিদ বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে টিপু ক্ষিপ্ত হয়ে কিলার কিনু ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ২০০৪ সালের ২৪ অক্টোবর দুপুরে মানিকগঞ্জের মূলজান পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে জাহিদকে এলজি অস্ত্র (সর্ট গান) দিয়ে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ২০০৪ সালের ২৬ অক্টোবর জাহিদের বড় ভাই বাদী হয়ে টিপু, কিনু, ভবতোষসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামী করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই টিপু, কিনু ও ভবতোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর টিপু ব্যতীত কিনু ও ভবতোষ ৪৭ মাস কারাবাস থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা টিপু, কিনু ও ভবতোষকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয়। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে জাহিদ হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে টিপু, কিনু ও ভবতোষকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন। পলাতক কিনু মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই গত ১৪ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। টিপু উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে বর্তমানে জামিনে আছেন ও ভবতোষ বর্তমানে ভারতে পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।