মানব পাচার রোধে মানিকগঞ্জে ‘মানব পাচার বিরোধী নেটওয়ার্ক’ গঠন
মানব পাচার একটি জঘন্য অপরাধ। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং এর পেছনে থাকা মূল কারণগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে।
রাশেদ চৌধুরী: মানব পাচার প্রতিরোধে মানিকগঞ্জে ‘মানব পাচার বিরোধী নেটওয়ার্ক’ গঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) জেলার বিভিন্ন এনজিও ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ নেটওয়ার্কের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
এই উদ্যোগটি রেজিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এর ‘আশ্বাস’ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে এবং উইনরক ইন্টারন্যাশনালের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রকল্প বর্তমানে দেশের ১০টি মানব পাচার-প্রবণ জেলায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মানিকগঞ্জে প্রকল্পটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন ও রামরু।
প্রতি বছর মানিকগঞ্জ জেলা থেকে অনেক মানুষ জীবিকার সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমান। তবে এর মধ্যে অনেকেই মানব পাচারের ফাঁদে পড়ে শিকার হন ভয়াবহ নির্যাতনের। এই প্রেক্ষাপটে, মানব পাচারের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে সচেতনতা তৈরি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই এই নেটওয়ার্ক গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য মানিকগঞ্জকে একটি পাচারমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন এনজিও ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন উইনরক ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি মাসনুন হক ও অসিত ব্যানার্জী, রামরুর ‘আশ্বাস’ প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর অনিন্দ জোতির্ম্যয়, রামরুর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি গোলাম রাব্বানি, এবং আহছানিয়া মিশনের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম।
মাসনুন হক তার বক্তব্যে বলেন, যদিও আশ্বাস প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তবে আমরা চাই এই নেটওয়ার্ক মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলে এবং মানব পাচার প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদী ভূমিকা রাখে। আমরা সবাই মিলে পাচারের শিকারদের পাশে দাঁড়াতে চাই — আইনগত, স্বাস্থ্যগত এবং পুনর্বাসনের দিক থেকেও।
অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও অতিথিরা বলেন, মানব পাচার একটি জঘন্য অপরাধ। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং এর পেছনে থাকা মূল কারণগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে।
তারা আরও বলেন, মানিকগঞ্জে উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থানের পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যেন মানুষ দিশেহারা হয়ে পাচারের ঝুঁকিপূর্ণ পথে না যায়।
নতুনভাবে গঠিত এই নেটওয়ার্ক মানব পাচার প্রতিরোধে স্থানীয় পর্যায়ে একটি প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
